Header Ads

ads header

New Post

মধুর গুণাগুণ ও উপকারিতা

 


মধু মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত এক অপূর্ব নেয়ামত স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যাবতীয় রোগ নিরাময়ে মধুর গুণ অপরিসীম রাসূলুল্লাহ (সা.) একেখাইরুদ্দাওয়াবা মহৌষধ বলেছেন আয়ুর্বেদ এবং ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রেও মধুকে বলা হয় মহৌষধ এটা যেমন বলকারক, সুস্বাদু উত্তম উপাদেয় খাদ্যনির্যাস, তেমনি নিরাময়ের ব্যবস্থাপত্রও আর তাই তো খাদ্য ওষুধ উভয়বিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নির্যাসকে প্রাচীনকাল থেকেই পারিবারিকভাবেপুষ্টিকর শক্তিবর্ধকপানীয় হিসেবে সব দেশের সব পর্যায়ের মানুষ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে ব্যবহার করে আসছে মধুতে যেসব উপকরণ রয়েছে তন্মধ্যে প্রধান উপকরণ সুগার সুগার বা চিনি আমরা অনেকই এড়িয়ে চলি কিন্তু মধুতে গ্লুকোজ ফ্রুকটোজ দুটি সরাসরি

 মেটাবলাইজড হয়ে যায় এবং ফ্যাট হিসাবে জমা হয় না মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, এতে অ্যালুমিনিয়াম, বোরন, ক্রোমিয়াম, কপার, লেড, টিন, জিংক জৈব এসিড (যেমন-ম্যালিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, টারটারিক এসিড এবং অক্সালিক এসিড), কতিপয় ভিটামিন, প্রোটিন, হরমোনস, এসিটাইল কোলিন, অ্যান্টিবায়োটিকস, ফাইটোনসাইডস, সাইস্টোস্ট্যাটিক্স এবং পানি (১৯-২১%) ছাড়াও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে ভিটামিন যেমন- ভিটামিন সি বা অ্যাসকরবিক এসিড, ভিটামিন বি-, বি-, বি-, বি-, বি-, ভিটামিন-, ভিটামিন-কে, ভিটামিন- বা ক্যারোটিন ইত্যাদি বিদ্যমান মধু এমন ধরনের ওষুধ, যার পচন নিবারক (অ্যান্টিসেপটিক), কোলেস্টেরলবিরোধী এবং ব্যাকটেরিয়াবিরোধী ধর্ম আছে প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে খালি পেটে চা চামচের দুই চামচ করে মধু ডান হাতের তালুতে নিয়ে চেটে খেতে হবে নিয়মিত পরিমিত মধু সেবন করলে  যেসব উপকার পাওয়া যায় তা হলো-

 

 

. হৃদরোগ প্রতিরোধ করে রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং হৃদপেশির কার্যক্রম বৃদ্ধি করে;

. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে;

. দাঁতকে পরিষ্কার শক্তিশালী করে;

. দৃষ্টিশক্তি স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে;

. মধুর রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা, যা দেহকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে;

. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে কোষকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে;

. বার্ধক্য অনেক দেরিতে আসে;

. মধুর ক্যালরি রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়, ফলে রক্তবর্ধক হয়;

. যারা রক্ত স্বল্পতায় বেশি ভোগে বিশেষ করে মহিলারা, তাদের জন্য নিয়মিত মধু সেবন অত্যন্ত ফলদায়ক;

১০. গ্লাইকোজেনের লেভেল সুনিয়ন্ত্রিত করে;

১১. আন্ত্রিক রোগে উপকারী মধুকে এককভাবে ব্যবহার করলে পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগের উপকার পাওয়া যায়;

১২. আলচার গ্যাস্ট্রিক রোগের জন্য উপকারী;

 ১৩. দুর্বল শিশুদের মুখের ভেতর পচনশীল ঘায়ের জন্য খুবই উপকারী;

১৪. শরীরের বিভিন্ন ধরনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি করে;

১৫. ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ মধু স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের কলা সুদৃঢ় করে;

১৬. মধুতে স্টার্চ ডাইজেস্টি এনজাইমস এবং মিনারেলস থাকায় চুল ত্বক ঠিক রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে;

১৭. মধু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে;

১৮. ক্ষুধা, হজমশক্তি রুচি বৃদ্ধি করে;

১৯. রক্ত পরিশোধন করে;

২০. শরীর ফুসফুসকে শক্তিশালী করে;

২১. জিহ্বার জড়তা দূর করে;

২২. মধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে;

২৩. বাতের ব্যথা উপশম করে;

২৪. মাথা ব্যথা দূর করে;

২৫. শিশুদের দৈহিক গড়ন ওজন বৃদ্ধি করে;

২৬. গলা ব্যথা, কাশি-হাঁপানি এবং ঠাণ্ডা জনিত রোগে বিশেষ উপকার করে;

২৭. শিশুদের প্রতিদিন অল্প পরিমাণ মধু খাওয়ার অভ্যাস করলে তার ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি, জ্বর ইত্যাদি সহজে হয় না;

 ২৮. শারীরিক দুর্বলতা দূর করে এবং শক্তি-সামর্থ্য দীর্ঘস্থায়ী করে;

২৯. ব্যায়ামকারীদের শক্তি বাড়ায়;

৩০. মধু খাওয়ার সাথে সাথে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে শরীর হয়ে উঠে সুস্থ, সতেজ এবং কর্মক্ষম

 

মধুর উপকারিতাঃ

শক্তি প্রদায়ী : মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী খাদ্য তাপ শক্তির ভালো উৎস মধু দেহে তাপ শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে

 

হজমে সহায়তা: এতে যে শর্করা থাকে, তা সহজেই হজম হয় কারণ, এতে যে ডেক্সট্রিন থাকে, তা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ক্রিয়া করে পেটরোগা মানুষের জন্য মধু বিশেষ উপকারী

 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এটি ডায়রিয়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে চাচামচ খাঁটি মধু ভোরবেলা পান করলে কোষ্ঠবদ্ধতা এবং অম্লত্ব দূর হয়

 

রক্তশূন্যতায়: মধু রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে বলে এটি রক্তশূন্যতায় বেশ ফলদায়ক কারণ, এতে থাকে খুব বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ ম্যাঙ্গানিজ

 

ফুসফুসের যাবতীয় রোগ শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে: বলা হয়, ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু উপকারী যদি একজন অ্যাজমা (শ্বাসকষ্ট) রোগীর নাকের কাছে মধু ধরে শ্বাস টেনে নেওয়া হয়, তাহলে সে স্বাভাবিক এবং গভীরভাবে শ্বাস টেনে নিতে পারবে অনেকে মনে করে, এক বছরের পুরোনো মধু শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য বেশ ভালো

 

অনিদ্রায়: মধু অনিদ্রার ভালো ওষুধ রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চাচামচ মধু মিশিয়ে খেলে এটি গভীর ঘুম সম্মোহনের কাজ করে

 

যৌন দুর্বলতায়: পুরুষদের মধ্যে যাঁদের যৌন দুর্বলতা রয়েছে, তাঁরা যদি প্রতিদিন মধু ছোলা মিশিয়ে খান, তাহলে বেশ উপকার পাবেন

 

প্রশান্তিদায়ক পানীয়: হালকা গরম দুধের সঙ্গে মিশ্রিত মধু একটি প্রশান্তিদায়ক পানীয়

 

মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষায়: মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষায় মধু ব্যবহৃত হয় এটা দাঁতের ওপর ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষয়রোধ করে দাঁতে পাথর জমাট বাঁধা রোধ করে এবং দাঁত পড়ে যাওয়াকে বিলম্বিত করে মধু রক্তনালিকে সম্প্রসারিত করে দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করে যদি মুখের ঘায়ের জন্য গর্ত হয়, এটি সেই গর্ত ভরাট করতে সাহায্য করে এবং সেখানে পুঁজ জমতে দেয় না মধু মিশ্রিত পানি দিয়ে গড়গড়া করলে মাড়ির প্রদাহ দূর হয়

 

পাকস্থলীর সুস্থতায়: মধু পাকস্থলীর কাজকে জোরালো করে এবং হজমের গোলমাল দূর করে এর ব্যবহার হাইড্রোক্রলিক অ্যাসিড ক্ষরণ কমিয়ে দেয় বলে অরুচি, বমিভাব, বুকজ্বালা এগুলো দূর করা সম্ভব হয়

 

তাপ উৎপাদনে: শীতের ঠান্ডায় এটি শরীরকে গরম রাখে এক অথবা দুই চাচামচ মধু এক কাপ ফুটানো পানির সঙ্গে খেলে শরীর ঝরঝরে তাজা থাকে

 

পানিশূন্যতায়: ডায়রিয়া হলে এক লিটার পানিতে ৫০ মিলিলিটার মধু মিশিয়ে খেলে দেহে পানিশূন্যতা রোধ করা যায়

 

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে: চোখের জন্য ভালো গাজরের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে

 

রূপচর্চায়: মেয়েদের রূপচর্চার ক্ষেত্রে মাস্ক হিসেবে মধুর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় মুখের ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধির জন্যও মধু ব্যবহৃত হয়

 

ওজন কমাতে: মধুতে নেই কোনো চর্বি পেট পরিষ্কার করে, চর্বি কমায়, ফলে ওজন কমে

 

হজমে সহায়তা: মধু প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি তাই মধু সহজে হজম হয় এবং হজমে সহায়তা করে

 

গলার স্বর: গলার স্বর সুন্দর মধুর করে

 

তারুণ্য বজায় রাখতে: তারুণ্য বজায় রাখতে মধুর ভূমিকা অপরিহার্য এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের রং ত্বক সুন্দর করে ত্বকের ভাঁজ পড়া বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে শরীরের সামগ্রিক শক্তি তারুণ্য বাড়ায়

 

হাড় দাঁত গঠনে: মধুর গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ক্যালসিয়াম ক্যালসিয়াম দাঁত, হাড়, চুলের গোড়া শক্ত রাখে, নখের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে, ভঙ্গুরতা রোধ করে

 

রক্তশূন্যতা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: এতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, যা রক্তশূন্যতা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

 

আমাশয় পেটের পীড়া নিরাময়ে: পুরোনো আমাশয় এবং পেটের পীড়া নিরাময়সহ নানাবিধ জটিল রোগের উপকার করে থাকে

 

হাঁপানি রোধে: আধা গ্রাম গুঁড়ো করা গোলমরিচের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু এবং আদা মেশান দিনে অন্তত তিনবার এই মিশ্রণ খান এটা হাঁপানি রোধে সহায়তা করে

 

উচ্চ রক্তচাপ কমায়: দুই চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ রসুনের রস মেশান সকাল-সন্ধ্যা দুইবার এই মিশ্রণ খান প্রতিনিয়ত এটার ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ কমায় প্রতিদিন সকালে খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত

 

রক্ত পরিষ্কারক: এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে এক বা দুই চামচ মধু এক চামচ লেবুর রস মেশান পেট খালি করার আগে প্রতিদিন এই মিশ্রণ খান এটা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে তা ছাড়া রক্তনালিগুলোও পরিষ্কার করে

 

রক্ত উৎপাদনে সহায়তা: রক্ত উৎপাদনকারী উপকরণ আয়রন রয়েছে মধুতে আয়রন রক্তের উপাদানকে (আরবিসি, ডব্লিউবিসি, প্লাটিলেট) অধিক কার্যকর শক্তিশালী করে

 

হৃদ্রোগে: এক চামচ মৌরি গুঁড়োর সঙ্গে এক বা দুই চামচ মধুর মিশ্রণ হৃদ্রোগের টনিক হিসেবে কাজ করে এটা হৃৎপেশিকে সবল করে এবং এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।সুত্রঃ ais.gov.bd,prothomalo.com

 

রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায়: মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ভেতরে এবং বাইরে যেকোনো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাও জোগান দেয় মধুতে আছে একধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী উপাদান, যা অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে

No comments