ভেজষ উদ্ভিদ
তুলসী:
তুলসী একটি ঔষধিগাছ।
তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধিযুক্ত, কটু তিক্তরস, রুচিকর। এটি সর্দি, কাশি,
কৃমি ও বায়ুনাশক এবং মুত্রকর, হজমকারক ও এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে বিশেষ
করে কফের প্রাধান্যে যে সব রোগ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফলদায়ক।
ঔষধিগুণ:
শিশুদের সর্দি কাশির
জন্য এটি একটি মহা ঔষধ হলেও যে কোন বয়সের মানুষই এ থেকে উপকার পেয়ে থাকে । শুধু
পুজো-অর্চনাতেই লাগে না ৷ তুলসী পাতার অনেক গুণ রয়েছে ৷
* জ্বর হলে জলের মধ্যে
তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করুন ৷ অথবা তিনটে দ্রব্য
মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা জলের সঙ্গে খান ৷ জ্বর
খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।
* কাশি যদি না কমে সেই
ক্ষেত্রে তুলসী পাতা এবং আদা পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷
* পেট খারাপ হলে তুলসীর
১০ টা পাতা সামান্য জিরের সঙ্গে পিষে ৩-৪ বার খান ৷ পায়খানা একেবারে বন্ধ হয়ে
যাবে, মানে পায়খানার ওই সমস্যাটা আর কি!
* মুখের দুর্গন্ধ দূর
করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ৷
* ঘা যদি দ্রুত কমাতে
চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান, কমে যাবে ৷
* শরীরের কোন অংশ যদি
পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালা কমবে ৷ পোড়া
জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে ৷ সেখানে কোন দাগ থাকবে না ৷
* ত্বকের চমক বাড়ানোর
জন্য, এছাড়াও ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান
৷
* বুদ্ধি এবং
স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন ৫-৭ টা তুলসী পাতা চিবান ৷
* প্রস্রাবে জ্বালা হলে
তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন ৷ উপকার
পাবেন ৷
* ত্বকের সমস্যা দূর
করতে তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগান ৷
ব্যবহার:
আমাদের দেশে
ছেলেমেয়েদের সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতার রস ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। এসব ক্ষেত্রে
কয়েকটি তাজা তুলসী পাতার রসের সাথে একটু আদার রস ও মধুসহ খাওয়ানো হয়। বাচ্চাদের
সর্দি-কাশিতে এটি বিশেষ ফলপ্রদ। তাজা তুলসী পাতার রস মধু, আদা ও পিঁয়াজের রসের
সাথে এক সাথে পান করলে সর্দি বের হয়ে যায় এবং হাপানিতে আরাম হয়।
বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যগত কারণ:
*তুলসীতে Eugenol অধিক পরিমাণে থাকায় তা Cox-2 Inhibitor রূপে কাজ করে বলে তা ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
*Hypoglycemic drugs এর সাথে তুলসী খেলে তা টাইপ
২ ডায়াবেটিস রোগে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
*তেজস্ক্রিয়তার ফেলে ক্ষতিগ্রস্থ কোষসমুহকে মেরামত করে।
*চর্বিজনিত হৃদরোগে এন্টি অক্সিডেন্টের ভুমিকা পালন করে।
*তুলসী একশেরও বেশি Phytochemicals( যেমন oleanolic acid ,beta caryophyllene ইত্যাদি)বহন করে বলে ক্যান্সার চিকিত্সায় ব্যবহৃত হয়।
*তুলসীর অ্যালকোহলিক নির্যাস Immune system এর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
*তুলসী স্নায়ুটনিক ও স্মৃতিবর্ধক।
*শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্নরোগ যেমন ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ,হাঁপানি প্রভৃতি রোগের নিরাময়ক।
*সর্দি ,কাশি, জ্বর, বমি, ডায়ারিয়া ,কলেরা ,কিডনির পাথর ,মুখের আলসারসহ চোখের
বিভিন্ন রোগে ইহা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
*দাঁতের রোগে উপশমকারী বলে টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
*দাঁতের রোগে উপশমকারী বলে টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
তুলসী গাছ আমাদের আশেপাশেই থাকে অনেক সময় । কিন্তু, আমরা তার সদ্ব্যবহার করতে পারি না। শুধু পুজো-অর্চনাতেই তুলসী পাতার প্রয়োজন পড়েনা ৷ আয়ুর্বেদে তুলসীকে ভেষজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে ৷
ঔষধি গুণাগুণ /b>
* পেট কামড়ানো, কাশি:
তুলসী পাতার রসে মধু মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চাদের পেট কামড়ানো, কাশি ও লিভার দোষে
উপকার পাওয়া যায়।
* ঘামাচি ও চুলকানি:
তুলসী পাতা ও দুর্বার ডগা বেটে গায়ে মাখলে ঘামাচি ও চুলকানি ভাল হয়।
দাদ ও অন্যান্য চর্মরোগে: স্থানীয়ভাবে তুলসী পাতার রস দাদ ও অন্যান্য চর্মরোগে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। পাতার রস ফোঁটা ফোঁটা করে কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়।
দাদ ও অন্যান্য চর্মরোগে: স্থানীয়ভাবে তুলসী পাতার রস দাদ ও অন্যান্য চর্মরোগে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। পাতার রস ফোঁটা ফোঁটা করে কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়।
* ম্যালেরিয়া: পাতা ও
শিকড়ের ক্বাথ ম্যালেরিয়া জ্বরের জন্য বেশ উপকারী। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে
প্রতিদিন সকালে গোল মরিচের সাথে তুলসী পাতার রস খেতে দেয়া হয়। যতদিন সম্ভব খাওয়া
যায়।
* বসন্ত, হাম: বসন্ত,
হাম প্রভৃতির পুঁজ ঠিকমত বের না হলে তুলসী পাতার রস খেলে তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসবে।
* ক্রিমি: তুলসী পাতার
রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ক্রিমি রোগে বেশ উপকার পাওয়া যায়। শুষ্ক তুলসী
পাতার ক্বাথ সর্দি, স্বরভঙ্গ, বক্ষপ্রদাহ, উদারাময় প্রভৃতি রোগ নিরাময় করে থাকে।
* পেট ব্যথা:
অজীর্ণজনিত পেট ব্যথায় তুলসী পাতার বেশ উপকার সাধন করে থাকে। এটি হজমকারক।
প্রতিদিন সকালে ১৮০ গ্রাম পরিমান তুলসী পাতার রস খেলে পুরাতন জ্বর, রক্তক্ষয়,
আমাশয়, রক্ত অর্শ এবং অজীর্ণ রোগ সেরে যায়।
* বাত ব্যথা: বাত
ব্যথায় আক্রান্ত স্থানে তুলসী পাতার রসে ন্যাকড়া ভিজিয়ে পট্টি দিলে ব্যথা সেরে
যায়।
* কীট-পতঙ্গ কামড়ালে: বোলতা, ভীমরুল, বিছা প্রভৃতি বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ কামড়ালে ঐ স্থানে তুলসী পাতার রস গরম করে লাগালে জ্বালা-যন্ত্রণা কম হয়।
* কীট-পতঙ্গ কামড়ালে: বোলতা, ভীমরুল, বিছা প্রভৃতি বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ কামড়ালে ঐ স্থানে তুলসী পাতার রস গরম করে লাগালে জ্বালা-যন্ত্রণা কম হয়।
* সর্দি: যারা সহজেই সর্দিতে
আক্রান্ত হয় (বিশেষ করে শিশুদের) তারা কিছুদিন ৫ ফোঁটা মধুর সাথে ১০ ফোঁটা রস খেলে
সর্দি প্রবণতা দূর হয়।
তুলসী মূল শুক্র
গাঢ়কারক এবং বাজীকারক। তুলসী পাতার ক্বাথ, এলাচ গুঁড়া এবং এক তোলা পরিমাণ মিছরী
পান করলে ধাতুপুষ্টি সাধিত হয় যতদিন সম্ভব খাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ইন্দ্রিয়
উত্তেজক। প্রতিদিন এক ইঞ্চি পরিমাণ তুলসী গাছের শিকড় পানের সাথে খেলে যৌনদূর্বলতা
রোগ সেরে যায়।
কোন কারনে রক্ত দূষিত
হলে কাল তুলসিপাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।শ্লেষ্মার জন্য নাক বন্ধ হয়ে
কোনো গন্ধ পাওয়া না গেলে সে সময় শুষ্ক পাতা চূর্ণের নস্যি নিলে সেরে যায়।
পাতাচূর্ণ দুই আঙ্গুলের চিমটি দিয়ে ধরে নাক দিয়ে টানতে হয়, সেটাই নস্যি। তুলসী
পাতা দিয়ে চায়ের মত করে খেলে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায়। তুলসী চা হিসাবে এটি বেশ
জনপ্রিয়।
তুলসিপাতার রসে লবন মিশিয়ে দাদে লাগালে উপশম হয়।
তুলসিপাতার রসে লবন মিশিয়ে দাদে লাগালে উপশম হয়।
* প্রস্রাবজনিত জ্বালা:
তুলসীর বীজ পানিতে ভিজালে পিচ্ছিল হয়। এই পানিতে চিনি মিশিয়ে শরবতের মত করে খেলে
প্রস্রাবজনিত জ্বালা যন্ত্রনায় বিশেষ উপকার হয়।
* কালো দাগ: মুখে
বসন্তের কাল দাগে তুলসীর রস মাখলে ঐ দাগ মিলিয়ে যায়। হামের পর যে সব শিশুর শরীরে
কালো দাগ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস মাখলে গায়ে স্বাভাবিক রং ফিরে আসে।
নিম:
নিম একটি ঔষধি গাছ, । এর ডাল, পাতা, রস, সবই কাজে লাগে। নিম একটি
বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর।নিমের কাঠ
খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ
কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও তৈরি করা হচ্ছে আজকাল। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই
বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উত্পাদন ও প্রসারকে উত্সাহ
এবং অন্যায়ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করাকে নিরুত্সাহিত করছে। নিমের এই গুনাগুনের কথা
বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে।
নিম একটি বহু বর্ষজীবি
ও চির হরিত বৃক্ষ।নিম গাছের পাতা, ফল, ছাল বা বাকল, নিমের তেল,বীজ। এক কথায় নিমের
সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়।
ঔষধি গুণাগুন:
বিশ্বব্যাপী নিম গাছ,
গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে
নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক
হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে চ্যাগাস
রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে,দন্ত চিকিতসায় ব্যাথামুক্তি ও জ্বর কমাতে,
জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।
ব্যবহার:
* কফজনিত বুকের ব্যথা:
অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে। এ জন্য ৩০ ফোটা নিম পাতার রশ সামান্য গরম
পানিতে মিশিয়ে দিতে ৩/৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমবে। গর্ভবতী,শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য
এ ঔষধটি নিষেধ।
* কৃমি: পেটে কৃমি হলে
শিশুরা রোগা হয়ে যায়। পেটে বড় হয়। চেহারা ফ্যকাশে হয়ে যায়। এ জন্য ৫০
মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিন ৩ বার সামান্য পানি গরমসহ খেতে
হবে।
* উকুন নাশ: নিমের পাতা
বেটে হালকা করে মাথায় লাগান। ঘন্টা খানেক ধরে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ২/৩ দিন এভাবে
লাগালে উকুন মরে যাবে।
* অজীর্ণ: অনেকদিন ধরে
পেটে অসুখ। পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, সিকি কাপ পানির সঙ্গে
মিশিয়ে সকাল- বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।
* খোস পাচড়া: নিম পাতা
সিদ্ধ করে পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে
কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।
* পোকা-মাকড়ের কামড়:
পোকা মাকড় কামল দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে
লাগালে ব্যথা উপশম হবে।
* দাতের রোগ: নিমের
পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের চাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাত হবে মজবুত, রক্ষা
পাবে রোগ।
* জন্ম নিয়ন্ত্রণে
নিম: নিম তেলা একটি শক্তিশালী শ্রক্রানুনাশক হিসেবে কাজ করে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা
দেখিয়েছেন যে, নিম তেল মহিলাদের জন্য নতুন ধরনের কার্যকরী গর্ভনিরোধক হতে পারে।
এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে সক্ষম।
মুখের দাগ দূর করার সব
থেকে ভাল ওষুধ হল নিম৷ মুখে ব্রনের সমস্যায় ভুগছেন? চিন্তা করার দরকার নেই৷ নিম
পাতার প্যাক মেখেই আপনি এর থেকে পরিত্রান পেতে পারেন৷ কি করে তৈরি করবেন এই
প্যাকটা চলুন জেনে নিই৷ চার পাঁচটা নিম পাতা ভাল করে ধুয়ে মিক্সিতে পিষে নিন৷ এর
মধ্যে এক চামচ মূলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন৷ প্যাকটা যদি
গাঢ় হয়ে যায় তাহলে ওর মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে নিন৷ মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষন রেখে
দিন৷ প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা উষ্ণ জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন৷
আমলকী:
আমলকী বা ‘আমলকি’
একপ্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম ‘আমালিকা’।
কাঁচা আমলকি:
আমলকি নিয়ে প্রাথমিক
গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে, এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে।
প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিস রোগে
আমলকির রস কিছু কাজ করে। কয়েক ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও এর কার্যকারিতার
প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগেও আমলকি কার্যকর বলে ইঁদুরের উপর
চালিত গবেষণায় প্রমান মিলেছে। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগের পরে ক্ষতিগ্রস্ত
প্যানক্রিয়াস (অগ্ন্যাশয়) -এর ক্ষত সারাতে আমলকি কার্যকর। আমলকির ফল, পাতা ও ছাল
থেকে তৈরি পরীক্ষামূলক ওষুধে কিছু রোগ নিরাময়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে যেমন-
ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, প্রদাহ এবং কিডনি-রোগ। আমলকি মানুষের রক্তের
কোলেস্টেরল-মাত্রা হ্রাস করতে পারে বলে প্রমাণ রয়েছে ডায়াবেটিক ইঁদুরের উপর
চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকির রস রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে পারে এবং
লিভারের কর্মক্ষমতা পুনরোদ্ধারে সাহায্য করতে পারে। [৯] আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন-সি
বা এস্করবিক এসিড থাকে (৪৪৫ মিগ্রা/১০০ গ্রাম)। তা সত্ত্বেও আরো অন্যান্য উপাদান
নিয়ে মতভেদ আছে এবং আমলকির ‘এন্টি-অক্সিডেন্ট’রূপে কার্যকারিতার পেছনে মূল ভূমিকা
ভিটামিন-সি এর নয়, বরং ‘এলাজিটানিন’ নামক পদার্থসমূহের বলে মনে করা হয়।যেমন
এমব্লিকানিন-এ (৩৭%), এমব্লিকানিন-বি (৩৩%), পানিগ্লুকোনিন (১২%) এবং পেডাংকুলাগিন
(১৪%).এতে আরো আছে পানিক্যাফোলিন, ফিলানেমব্লিনিন-এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ।এই ফলে
অন্যান্য ‘পলিফেনল’ও থাকে। যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েড, কেমফেরল, এলাজিক এসিড ও গ্যালিক
এসিড।
ব্যবহার:
আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে
অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’
থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০
গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের
চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’
রয়েছে। একজন বয়স্ক লোকের
প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ দরকার। দিনে দুটো আমলকি খেলে এ পরিমাণ ভিটামিন
‘সি’ পাওয়া যায়। আমলকি খেলে মুখে রুচি বাড়ে।স্কার্ভি বা দন্তরোগ সারাতে টাটকা
আমলকি ফলের জুড়ি নেই। এছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই
উপকারী।লিভার ও জন্ডিস রোগে উপকারী বলে আমলকি ফলটি বিবেচিত। আমলকি, হরিতকী ও
বহেড়াকে একত্রে ত্রিফলা বলা হয়। এ তিনটি শুকনো ফল একত্রে রাতে ভিজিয়ে রেখে
সকালবেলা ছেঁকে খালি পেটে শরবত হিসেবে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়।বিভিন্ন ধরনের তেল
তৈরিতে আমলকি ব্যবহার হয়। কাঁচা বা শুকনো আমলকি বেটে একটু মাখন মিশিয়ে মাথায়
লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম আসে।কাঁচা আমলকি বেটে রস প্রতিদিন চুলে লাগিয়ে দুতিন
ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এভাবে একমাস মাখলে চুলের গোড়া শক্ত, চুল উঠা এবং তাড়াতড়ি
চুল পাকা বন্ধ হবে।
ঔষধি গুণ :
* আমলকী কেন্দ্রীয়
স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে।
* বমি বন্থে কাজ করে।
* দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী।
* এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক।
* বমি বন্থে কাজ করে।
* দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী।
* এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক।
ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ
আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন অসুখ সারানো
ছাড়াও রোগ প্রতিরোধক ৰমতা গড়ে তুলতেও আমলকী দারুণ সাহায্য করে। আমলকীর গুণাগুণের
জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এখন আমলকীর নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমলকী খাওয়ার উপকারিতা :
* ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ
আমলকীতে যথেষ্ট পরিমাণে এ্যান্টি অঙ্েিডন্ট রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিকালস প্রতিরোধ
করতে সাহায্য করে। বুড়িয়ে যাওয়া ও সেল ডিজেনারেশনের অন্যতম কারণ এই ফ্রি
র্যাডিকালস।
* আমলকী ত্বক, চুল ও
চোখ ভাল রাখার জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো-কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িও
ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
* আমলকী হজমে সাহায্য
করে ও স্টমাক এ্যাসিডে ব্যালেন্স বজার রাখে।
* আমলকী লিভার ভাল
রাখে, ব্রেনের কার্যকলাপে সাহায্য করে ফলে মেন্টাল ফাংশনিং ভাল হয়।
* আমলকী বস্নাড সুগার
লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল লেভেলেও
কম রাখাতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
* হার্ট সুস্থ রাখে,
ফুসফুসকে শক্তিশালী করে তোলে।
* শরীর ঠান্ডা রাখে,
শরীরের কার্যৰমতা বাড়িয়ে তোলে, মাসল টোন মজবুত করে।
* লোহিত রক্তকণিকার
সংখ্যা বাড়িয়ে তুলে দাঁত ও নখ ভাল রাখে।
* জ্বর, বদহজম,
সানবার্ন, সানস্ট্রোক থেকে রৰা করে।
* আমলকীর জুস দৃষ্টি
শক্তি ভাল রাখার জন্য উপকারী। ছানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ব্রণ ও ত্বকের
অন্যান্য সমস্যায় উপকারী।
* পেটের জ্বালা
জ্বালাভাব কম রাখে। লিভারের কার্যকলাপে সাহায্য করে, পাইলস সমস্যা কমায়।
* শরীরের অপ্রয়োজনীয়
ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। ব্রঙ্কাইটেসও এ্যাজমার জন্য আমলকীর জুস উপকারী।
* আমলকী গুঁড়োর সঙ্গে
সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে থেকে পারেন। খিতে বাড়াতে সাহায্য করে।
* এক গস্নাস দুধ বা
পানির মধ্যে আমলকী গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন।
এ্যাসিডেটের সমস্যা কম রাখতে সাহায্য করবে।
* আমলকীতে সামান্য লবণ,
লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রাখুন। শুকিয়ে যাওয়ার পর খেতে পারেন।
* খাবারের সঙ্গে আমলকীর
আচার খেতে পারেন। হজমে সাহায্য করবে।
* আমলকী মাঝারি আকারে
টুকরো করে নিয়ে ফুটনত্ম পানির মধ্যে দিন। আমলকী নরম হয়ে তরে নামিয়ে ঝরিয়ে লবণ, আদা
কুঁচি, লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রেখে দিতে পারেন। সারা বছরই ভাল থাকবে।
তেলাকুচা:
তেলাকুচা একপ্রকারের
ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে একে ‘কুচিলা’, তেলা, তেলাকচু, তেলাহচি,
তেলাচোরা কেলাকচু, তেলাকুচা বিম্বী ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। অনেক অঞ্চলে এটি সবজি
হিসেবে খাওয়া হয়। গাছটির ভেষজ ব্যবহারের জন্য এর পাতা, লতা, মূল ও ফল ব্যবহৃত
হয়। এটি লতানো উদ্ভিদ। এটি গাঢ় সবুজ রঙের নরম পাতা ও কাণ্ডবিশিষ্ট একটি
লতাজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। লতার কাণ্ড থেকে আকশীর সাহায্যে অন্য গাছকে জড়িয়ে
উপরে উঠে। পঞ্চভূজ আকারের পাতা গজায়, পাতা ও লতার রং সবুজ। এর ফল ও কচি ডগা খাদ্য
হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেখানে। তেলাকুচায় প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন আছে।
ঔষধি গুণাগুণ:
তেলাকুচা ফলে আছে
‘মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং’, ‘এনাফাইলেকটিক-রোধী’ এবং ‘এন্টিহিস্টামিন’ জাতীয়
উপাদান। কবিরাজী চিকিৎসায় তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ,
জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ (edema), হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস।
ঔষধি গুন :
ভেষজশাত্রে ঔষধি গাছ হিসাবে আর্জুনের ব্যবহার অগনিত।বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা।এর ঔষধি গুন মানবসমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।শরীরের বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবিত রাখতে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও বেদ-সংহিতায়।তার পর যত দিন যাচ্ছে ততই অর্জুনের উপকারী দিক উদ্ভাবিত হচ্ছে।
ভেষজশাত্রে ঔষধি গাছ হিসাবে আর্জুনের ব্যবহার অগনিত।বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা।এর ঔষধি গুন মানবসমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।শরীরের বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবিত রাখতে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও বেদ-সংহিতায়।তার পর যত দিন যাচ্ছে ততই অর্জুনের উপকারী দিক উদ্ভাবিত হচ্ছে।
* যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রাক্তচাপ নাই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল এর সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে পেটে যাতে বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
* অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয়, হৃৎপিন্ডের ক্ষমতা বাড়ে।এটি রক্তের কোলেষ্টরল কমায় এবং ফলত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
* বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং লিভারসিরোসিসের টনিক হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
* অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ টানিন মুখ,জিহ্বা ও মাড়ীর প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যাবহার হয়।এটি মাঢ়ীঢ় রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছাল বেটে লাগালে সেরে যায়।
* অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়, ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথ্যা ,প্রদর ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী।
* এটি সংকোচ ও জ্বর নিবারক হিসাবেও কাজ করে।
* এ ছাড়া অর্জুনে saponin রয়েছে, একটি যৌন উদ্দীপনা বাড়ায়।তাই চর্ম ও যৌন রোগে অর্জুন ব্যাবহ্রত হয়।যৌন উদ্দীপনা বাড়াতেও অর্জুনের ছালের রস ব্যাবহার হয়।
* অর্জুনের ছালে essential oil রয়েছে তাই অর্জুন খাদ্যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়।খাদ্যাতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
* ক্যান্সার কোষের বর্ধন রোধকারী gallic acid,ethy gallae ও lutenolin রয়েছে অর্জুন ছালে। এ কারনে এটি ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যাহারের সুযোগ রয়েছে।
ভেষজ শাস্ত্রে ঔষধি গাছ হিসেবে অর্জুনের ব্যবহার অগণিত । বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর একজন চিকিৎসক থাকা একই কথা। এর ঔষধি গুণ মানব সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই। শারীরিক বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবত করার ভেষজ রস হিসেবে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও বেদ-সংহিতায়। তারপর যতদিন যাচ্ছে অর্জুনের উপকারী দিক ততই উদ্ভাসিত হচ্ছে। অর্জুন এমনি এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ যা মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে বহু যুগ ধরে। এটি কমব্রিটেসি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এ গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia arjuna , সংস্কৃত নাম ককুভ।
বৃহদাকৃতির বহুবর্ষজীবী এই উদ্ভিদটি প্রায় ১৮-২৫ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হয়ে থাকে। গাছটির মাথা ছড়ানো ডালগুলো নীচের দিকে ঝুলানো থাকে। পাতা দেখতে অনেকটা মানুষের জিহবাকৃতির। ছাল খুব মোটা এবং ধূসর বর্ণের। গাছ থেকে সহজেই ছাল উঠানো যায়। ফল দেখতে কামরাঙ্গার মত, পাঁচ খাঁজ বিশিষ্ট কিন্তু আকৃতিতে অনেক ছোট। শীতের শেষেই সাধারণত গাছ নিষ্পত্র হয়ে যায় এবং বসন্তে নতুন পাতায় গাছ ভরে যায়। নতুন পাতা গজানোর সময়েই গাছের শাখাগুলো পুষ্পমঞ্জরিতে ভরে ওঠে।
নিম্মে অর্জুনের কিছু উপকারী দিক বর্ণনা করা হলো-
হৃদরোগ:
অর্জুনের প্রধান ব্যবহার হৃদরোগে । অর্জুন ছালের রস কো-এনজাইম কিউ-১০ সমৃদ্ধ । এই কো-এনজাইম কিউ-১০ হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে । বাকলের রস ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টেরল লেভেল কমায় । অর্জুনের ছাল বেটে রস খেলে হৃদপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয় এবং হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ে । বাকলের ঘন রস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে। বাকলে রস না থাকলে শুকনো বাকলের
অর্জুনের প্রধান ব্যবহার হৃদরোগে । অর্জুন ছালের রস কো-এনজাইম কিউ-১০ সমৃদ্ধ । এই কো-এনজাইম কিউ-১০ হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে । বাকলের রস ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টেরল লেভেল কমায় । অর্জুনের ছাল বেটে রস খেলে হৃদপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয় এবং হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ে । বাকলের ঘন রস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে। বাকলে রস না থাকলে শুকনো বাকলের
গুঁড়া ১-২ গ্রাম দুধের সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে হবে।
অ্যাজমা:
অর্জুন ছালের পাউডার ১২ গ্রাম দুধের ক্ষীর বা পায়েসের সাথে মিশিয়ে খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির অ্যাজমা রোগের স্থায়ী সমাধান হবে।
অর্জুন ছালের পাউডার ১২ গ্রাম দুধের ক্ষীর বা পায়েসের সাথে মিশিয়ে খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির অ্যাজমা রোগের স্থায়ী সমাধান হবে।
ক্ষয়কাশে:
অর্জুন ছালের গুঁড়া, বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে শুকিয়ে রাখতেন প্রাচীন বৈদ্যেরা। দমকা কাশি হতে থাকলে একটু ঘি ও মধু বা মিছরির গুঁড়া মিশিয়ে খেতে দিতেন। এতে কাশির উপকার হতো।
অর্জুন ছালের গুঁড়া, বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে শুকিয়ে রাখতেন প্রাচীন বৈদ্যেরা। দমকা কাশি হতে থাকলে একটু ঘি ও মধু বা মিছরির গুঁড়া মিশিয়ে খেতে দিতেন। এতে কাশির উপকার হতো।
হাড় মচকে গেলে বা চিড় খেলে:
অর্জুন ছাল ও রসুন বেটে অল্প গরম করে মচকানো জায়গায় লাগিয়ে বেঁধে রাখলে সেরে যায়। তবে সেই সাথে অর্জুন ছালের চূর্ণ ২-৩ গ্রাম মাত্রায় আধা চামচ ঘি ও সিকি কাপ দুধ মিশিয়ে অথবা শুধু দুধ মিশিয়ে খেলে আরও ভালো হয়।
অর্জুন ছাল ও রসুন বেটে অল্প গরম করে মচকানো জায়গায় লাগিয়ে বেঁধে রাখলে সেরে যায়। তবে সেই সাথে অর্জুন ছালের চূর্ণ ২-৩ গ্রাম মাত্রায় আধা চামচ ঘি ও সিকি কাপ দুধ মিশিয়ে অথবা শুধু দুধ মিশিয়ে খেলে আরও ভালো হয়।
ত্বকের পরিচর্যা:
ত্বকে ব্রণের ক্ষেত্রে অর্জুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছালের চূর্ণ মধুর সাথে মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগালে খুব দ্রুত উপকার হয়। এছাড়া ছালের মিহি গুঁড়া মধু মিশিয়ে লাগালে মেচতার দাগ দূর হয়।
ত্বকে ব্রণের ক্ষেত্রে অর্জুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছালের চূর্ণ মধুর সাথে মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগালে খুব দ্রুত উপকার হয়। এছাড়া ছালের মিহি গুঁড়া মধু মিশিয়ে লাগালে মেচতার দাগ দূর হয়।
বুক ধড়ফড়:
যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মিলি পানির সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকাল বেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি অবশ্যই কমবে। তবে পেটে যেন বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লো-ব্লাড প্রেসারে উপযুক্ত নিয়মে তৈরি করে খেলেও অবশ্য প্রেসার বাড়বে।
যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মিলি পানির সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকাল বেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি অবশ্যই কমবে। তবে পেটে যেন বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লো-ব্লাড প্রেসারে উপযুক্ত নিয়মে তৈরি করে খেলেও অবশ্য প্রেসার বাড়বে।
রক্তপিত্তে:
মাঝে মাঝে কারণে বা অকারণে রক্ত ওঠে বা পড়ে। সেক্ষেত্রে ৪-৫ গ্রাম ছাল রাত্রিতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে নিয়ে পানিটা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
মাঝে মাঝে কারণে বা অকারণে রক্ত ওঠে বা পড়ে। সেক্ষেত্রে ৪-৫ গ্রাম ছাল রাত্রিতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে নিয়ে পানিটা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ফোঁড়া:
ফোঁড়া হলে পাতা দিয়ে ঢেকে রাখলে ফোঁড়া ফেটে যায়, তারপর পাতার রস দিলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
ফোঁড়া হলে পাতা দিয়ে ঢেকে রাখলে ফোঁড়া ফেটে যায়, তারপর পাতার রস দিলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
ক্ষত বা ঘা:
শরীরে ক্ষত বা ঘা হলে, খোস-পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছালের ক্বাথ দিয়ে ধুয়ে ছালের মিহি গুঁড়া পানি দিয়ে মিশিয়ে লাগালে দ্রুত ঘা সেরে যায়।
শরীরে ক্ষত বা ঘা হলে, খোস-পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছালের ক্বাথ দিয়ে ধুয়ে ছালের মিহি গুঁড়া পানি দিয়ে মিশিয়ে লাগালে দ্রুত ঘা সেরে যায়।
কানের ব্যথায়:
কানের ব্যথায় অর্জুন ব্যবহার করা হয়। কচি পাতার রস কানের ভিতরে দুই ফোঁটা করে দিলে কানের ব্যথা ভালো হয়।
কানের ব্যথায় অর্জুন ব্যবহার করা হয়। কচি পাতার রস কানের ভিতরে দুই ফোঁটা করে দিলে কানের ব্যথা ভালো হয়।
যৌন রোগ:
যাদের মধ্যে যৌন অনীহা দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে অর্জুনের ছাল চূর্ণ উপকারী। এই ছাল চূর্ণ দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত খেলে এই রোগ দূর হয়। এছাড়া যাদের শুক্রমেহ আছে তারা অর্জুন ছালের গুঁড়া ৪-৫ গ্রাম ৪-৫ ঘণ্টা আধা পোয়া গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে, তারপর ছেঁকে ওই পানির সাথে ১ চামচ শ্বেতচন্দন মিশিয়ে খেলে উপকার হয় । এটা সুশ্রুত সংহিতার কথা ।
যাদের মধ্যে যৌন অনীহা দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে অর্জুনের ছাল চূর্ণ উপকারী। এই ছাল চূর্ণ দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত খেলে এই রোগ দূর হয়। এছাড়া যাদের শুক্রমেহ আছে তারা অর্জুন ছালের গুঁড়া ৪-৫ গ্রাম ৪-৫ ঘণ্টা আধা পোয়া গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে, তারপর ছেঁকে ওই পানির সাথে ১ চামচ শ্বেতচন্দন মিশিয়ে খেলে উপকার হয় । এটা সুশ্রুত সংহিতার কথা ।
রক্ত আমাশয়ে:
৪-৫ গ্রাম অর্জুন ছালের ক্বাথে ছাগলের দুধ মিশিয়ে খেলে রক্ত আমাশয় ভালো হয়।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়:
ডায়রিয়া বা পেটের অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে অর্জুনের ছাল ৪৫-৩০ গ্রাম করে খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও অসুবিধা দূর হয়। মুখ, জিহ্বা ও মাড়ির প্রদাহে : অর্জুনের ছাল এসব রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি মাড়ির রক্তপাতও বন্ধ করে। এছাড়াও অর্জুন ছাল সংকোচক ও জ্বর নিবারক হিসেবেও কাজ করে।
ডায়রিয়া বা পেটের অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে অর্জুনের ছাল ৪৫-৩০ গ্রাম করে খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও অসুবিধা দূর হয়। মুখ, জিহ্বা ও মাড়ির প্রদাহে : অর্জুনের ছাল এসব রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি মাড়ির রক্তপাতও বন্ধ করে। এছাড়াও অর্জুন ছাল সংকোচক ও জ্বর নিবারক হিসেবেও কাজ করে।
এছাড়াও এর রয়েছে অনেক ঔষধিগুণ। ইদানিং অর্জুন গাছের ছাল থেকে ‘অর্জুন চা’ তৈরি হচ্ছে যা হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। DOS থেরাপি অনুযায়ী অর্জুন ফল দেখতে মানব দেহের হৃদপিন্ডের মতো তাই অর্জুনকে হৃদরোগের মহৌষধ বলা হয়।
ধুতরা:
সর্বজন
পরিচিত এই ধুতরা অযত্নসম্ভুত গুল্ম। Solanaceae
পরিবারের ধুতরার বৈজ্ঞানিক নাম হলো Datura fastuosa. উপমহাদেশের প্রায় সকল স্থানেই দেখা যায়।
এক একটা গাছ ৪/৫ বৎসরও বেঁচে থাকে। সাদা ফুলের গাছই যত্রতত্র দেখা যায়। বর্ষাকালে
ঘন্টার আকারে সাদা ফুল হয়, তাই তার এক নাম ‘ঘন্টাপুষ্প’। লাড়ুর মত গোল ফলের চারিদিকে ছোট ছোট কাঁটা
আছে, তাই এই গাছের আর একটি পর্যায় শব্দনাম ‘কন্টফল’। গাছ, ফল, পাতা সবই
সবুজ রং- এর। কোন পশুপক্ষ এর পাতা বা ফুল খায় না। ফলের মধ্যে গুচ্ছাকারে বহু সাদা
বীজ হয়, এর ফল পাকলে ফেটে যায়, তখন ঐ বীজের
রং পাংশুটে (ছাই) রং এর হয়।
ধুতরার ঔষধি গুনাগুন:
১। উন্মত্ত কুকুর ও শৃগালে কামড়ালে-
ধূতরার মুল কাঁচা ১ ১/২ গ্রাম (দেড় গ্রাম) পূনর্নবার (Boerhaavia repens) কাঁচা মুল ৫ গ্রাম একসঙ্গে বেটে শীতল দুগ্ধ
বা জলের সাথে পান করাতে বলা হয়েছে ।
২। উন্মাদে- ধুতরার মুলের খুব সরু যে শিকড়
(মুল শিকড় বাদ) কাঁচা ১ গ্রাম (৭/৮ রতি) শিলে বেটে সেটা আধসের জলে গুলে সেই জলে
৫০ গ্রাম আন্দাজ পুরানো চাল দুধ আধ সের ও মাত্রা মত চিনি বা মিছরি দিয়ে পায়েস
করে এইটা সকালে এবং বিকালে খাওয়াতে হবে। তবে রোগীর বলাবল, ক্ষেত্র, বয়স এসব
বিচার করে রোগীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা উচিত। বিশেষ সতর্কতাঃ- বিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ
ভিন্ন জনসাধারণের পক্ষে এটি ব্যবহার করা উচিত হবে না। ধুতরা গাছের কোন অংশের
আভ্যন্তরিক প্রয়োগে বিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩। গরলবিষে- ধুতরার মূল, কাঁচা হলুদ, শিরীষ ফুল (Albizzia lebbeck Benth)একসঙ্গে বেটে লাগালে গরল বিষ দূর হয়।
৪। টাক রোগে - যেটা বৈদ্যকের দৃষ্টিতে
ইন্দ্রলুপ্ত রোগ, সাধারণ লোকের ধারণা, এটা
তেলাপোকায় কেটে দিয়েছে; তা নয়, এটা একপ্রকার Fungus infection। একবার গায়ের
কোন জায়গায় বসলে তাকে তাড়ানো মুশকিল। এ ক্ষেত্রে ধুতরা পাতার রস মাথায় যেখানে
হয়েছে সেখানে লাগাতে হবে। তবে অনকে সময় দেখা যায় প্রায় সমগ্র মাথায় এই রোগ
ব্যপ্ত হয়ে পড়েছে, সেক্ষেত্রে পাতার রস আজ এধার ও কাল ওধার করে
লাগাতে হয়; দিনে একবারের বেশী লাগানো উচিত নয়, আর এক দিন
বাদ এক দিন লাগালেই ভাল।
৫।
ক্রিমিতে- পাতার রস ২/৩ ফোঁটা করে দুধের সঙ্গে খাওয়াতে হবে ।
৬। স্তনের ব্যথায়ঃ- ধুতরার পাতার রস করে
তাকে জ্বাল দিয়ে ঘন করে (মধুর মত) তুলি করে লাগাতে হয়, এর দ্বারা
ব্যথা ও ফুলো দুয়েরই উপশম হয়। আর যদি এর সঙ্গে একটু আফিং মুসব্বর মিশিয়ে লাগানো
যায় তবে আর ফলপ্রদ হয়।
৭। ফিক
ব্যথায়ঃ- সে ঘাড়ে বা পিঠে যে কোন জায়গায় হোক না কেন ধুতরার পাতা ও চুণ এক
সঙ্গে রগড়ে রস বের করে সেই রসটা লাগালে ঐ ব্যথা কমে যায়; অন্ততঃ ৩ বার
৪/৫ ঘন্ট অন্তর লাগাতে হয়।
৮। সাদা
আমাশায়ঃ- কাল ধুতরার শুস্ক পাতা ও ফুল বাসক পাতায় বেঁধে চুরুট তৈরী করে সেই
চুরুটের ধোয়া টানলে হাঁপের টান কমে যায় বটে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সর্দিটা টেনে যায়।
বাসকপাতা বা ফুল ভেঙ্গে বিড়ির তামাকের মত করে নিতে হয়- তার মাত্রা হবে ৩ রতি
থেকে ৬ রতি পর্যন্ত।
বাসক:
বাসক একটি ভারত
উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশী জন্মে। লোকালয়ের কাছেই
জন্মে বেশী। হালকা হলুদে রংয়ের ডালপালায়ক্ত ১ থেকে ২ মি. উঁচু গাছ, ঋতুভেদে
সর্ব্বদাই প্রায় সবুজ থাকে। বল্লমাকারের পাতা বেশ বড়। ফুল ঘন, ছোট স্পাইকের ওপর
ফোটে। স্পাইকের বৃন্ত পাতার চেয়ে ছোট। স্পাইকের ওপর পাতার আকারে উপপত্র থাকে যার
গায়ে ঘন এবং মোটা শিরা থাকে। ফুলের দল (কোরোল্লা বা পত্রমূলাবর্ত) সাদা বর্ণ। তার
ওপর বেগুনী দাগ থাকে। ফল সুপারি আকৃতির; বীজে ভর্তি।
বাসকের ঔষধী গুণ:
তাজা অথবা শুকানো পাতা
ওষুধের কাজে লাগে। বাসকের পাতায় “ভাসিসিন” নামীর ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে।
শ্বাসনালীর লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ ।
বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা ক’রে দেয় বলে
সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী। তবে অধিক মাত্রায়
খেলে বমি হয়, অন্তত: বমির ভাব বা নসিয়া হয়, অস্বস্তি হয়। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায়
বাসকের ভেষজ গুণাবলি প্রমাণিত হয়েছে।
এর মূল, পাতা, ফুল, ছাল সবই ব্যবহার হয়।
এর মূল, পাতা, ফুল, ছাল সবই ব্যবহার হয়।
প্রয়োগ:
১. বাসক পাতার রস ১-২
চামচ হাফ থেকে এক চামচ মধুসহ খেলে শিশুর সদির্কাশি উপকার পাওয়া যায়।
২. বাসক পাতার রস
স্নানের আধ ঘন্টা আগে মাথায় কয়েকদিন মাখলে উকুন মরে যায়। আমবাত ও ব্রণশোথে (ফোঁড়ার
প্রাথমিক অবস্থা) বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়।
৩. যদি বুকে কফ জমে
থাকে এবং তার জন্যে শ্বাসকষ্ট হলে বা কাশি হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং
কন্টিকারীরস ১-২ চামচ, ১ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে।
৪. প্রস্রাবে
জ্বালা-যন্ত্রনা থাকলে বাসকের ফুল বেটে ২-৩ চামচ মিছরি ১-২ চামচ সরবত করে খেলে এই
রোগে উপকার পাওয়া যায়।
৫. জ্বর হলে বা অল্প
জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০ গ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলি লিটার জলে ফোটাতে হবে।
৬. ২৫ মিলি লিটার থাকতে
নামিয়ে তা ছেঁকে নিয়ে দিনে ২ বার করে খেলে জ্বর এবং কাশি দুইই চলে যায়।
৭. বাসকের কচিপাতা
১০-১২ টি এক টুকরো হলুদ একসঙ্গে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগলে কয়েকদিনের মধ্যে তা
সেরে যায়।
৮. বাসকপাতা বা ফুলের
রস ১-২ চামচ মধু বা চিনি ১চামচসহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস রেগে উপকার পাওয়া যায়।
৯. পাইরিয়া বা দাঁতের
মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক পাতা ২০ টি থেঁতো করে ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে
নামিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
ভেষজ দাওয়াই:
* শিশুর পেটে কৃমি
থাকলে বাসকের ছালের ক্বাথ খাওয়ালে এর উগ্র তিক্ত স্বাদ কৃমি বের হয়ে যায়।
* যাদের হাঁপানির টান
আছে তারা বাসক পাতা শুকনো করে, ওই পাতা বিড়ি বা চুরুটের মতো পাকিয়ে এর সাহায্যে
ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট প্রশমিত হয়।
* যাদের গায়ে ঘামের
গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দূর হবে।
*বাসকপাতার রস ও
শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে রং ফরসা হবে।
* এক কলসি পানিতে
তিন-চারটি বাসকপাতা ফেলে তিন-চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়।
এরপর ব্যবহার করতে পারেন।
* পাতার রস নিয়মিত খেলে
খিঁচুনি রোগ দূর হয়ে যায়।
* বাসক পাতার রস মাথায়
লাগালের উকুন চলে যায়।
* বাসক পাতা বা ফুলের
রস এক বা দুই চামচ মধু বা চিনি দিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
* শরীরে দাদ থাকলে বাসক
পাতার রস লাগালে ভালো হয়ে যায়।
অন্যান্য উপকারিতা:
বাসকের পাতা সবুজ খাদ্য
হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পাতা থেকে হলদে রং পাওয়া যায়। বাসক পাতায় এমন কিছু
ক্ষারীয় পদার্থ আছে যায় ফলে ছত্রাক জন্মায় না এবং পোকামাকড় ধরে না বলে ফল
প্যাকিং এবং সংরক্ষণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। পাতায় কিছু দুর্গন্ধ আছে বলে পগুরা
মুখ দেয় না। সেই কারণে চাষ আবাদের জন্য জমি উদ্ধারের কাজে বাসকের পাতা বিশেষ
উপকারী।
উদ্ভিদের নাম : হাতিশুড়, হস্তিশুন্ডি হাতিশুঁড়ো, Hatishuro
স্থানীয় নাম : হাতিশুঁড়ো
ভেজষ নাম : Heliotropium
indicum Linn..
ফ্যামিলি : Boraginaceae
ব্যবহার্য অংশ : সমগ্র গাছ
রোপনের সময় : যে কোনো সময় জন্মে।
উত্তোলনের সময় : যে কোনো সময় সংগ্রহ করা যায়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ : অজত্নে যত্রতত্র জন্মে।
চাষের ধরণ : গ্রীষ্মে ফুল হয়। আতি ক্ষুদ্র ফল পেকে ছড়িয়ে বংশ বিস্তার হয়।
উদ্ভিদের ধরণ : ছোট গুল্ম জাতীয় গাছ।
পরিচিতি : বর্ষজীবী ছোট গুল্ম, ভারতবর্ষের অযত্নসম্ভুত অতি সাধারণ গাছ, এক দেড় ফুট উঁচু হয়। এই গাছের কান্ডগুলি ফাঁপা ও নরম। পুষ্পদন্ডেব বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষনীয়। এর পুষ্পদন্ডটি দেখতে হাতির শুঁড়ের মত,তাই হয়ত তার এই নামকরণ হয়েছে।
ঔষধি গুনাগুন :
১। ফুলোয়- হাঠৎ ঠান্ডা লেগে হাতে পায়ের গাঁট ফুলে গেলে (এটা সাধারণতঃ কফের বিকারে হয়) এই হাতিশুঁড়ো পাতা বেটে অল্প গরম করে ঐ সব ফুলোর জায়গায় লাগালে ওটা কমে যায়।
২। আঘাতের ফুলায়- এই পাতা বেটে গরম করে ঐ আঘাতের জায়গায লাগালে ব্যথা ও ফুলো দুইই চলে যায়।
৩। বাগীর ফুলোয়- ঊরু ও তলপেটের সন্ধিস্থানে অর্থাৎ কু’চকীতে যেটা হয় তার নামই বলা হয় বাগী, ডান বা বাম যে কোন দিকেই হতে পারে। সাধারণঃ এটা যৌন সংসর্গের সময় অস্বাভাবিক অবস্থানের জন্য অথাব মেহ বা ঔপসর্গিক মেহ (গণোরিয়া) রোগাগ্রস্ত লোকগুলি এই রোগের বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এক্ষেত্রেও ঐ পাত্য বেটে অল্প গরম করে লাগালেও কমে যায়।
৪। রিউমেটিকে- এই বাতে ফুলো থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। এগুলি সাধারণতঃ অস্থির সন্ধিস্থানে (গাঁটে) বেশী হয়। এ ক্ষেত্রে এরন্ড তৈলের (রেডির তেল) সঙ্গে এই পাতার রস বা পাতা বাটা দিয়ে পাক করে ছেঁকে নিয়ে সেই তৈল গাঁটে লাগাতে হয়। রেডির তেল বৈদ্য দোকানে পাওয়া যায়।
৫। বিষাক্ত পোকার কামড়ে- জ্বালা করে কোন কোন ক্ষেত্রে ফুলেও যায়, সে সময় এই পাতার রস করে লাগালে ওটা কমে যায়।
৬। শ্লেষ্মা জ্বরে- সর্দিতে বুক ভার, সেক্ষেত্রে এই পাতার ২ চামচ একটু গরম করে ছেঁকে নিয়ে খেতে দিতেন প্রাচীন বৈদ্যরা। এর দ্বারা সর্দিটা বমি হয়ে বেরিয়ে যায়।
৭। টায়ফায়েড জ্বরে- পিপাসা ও সঙ্গে মাথা চালাও প্রবল থাকে, এ ক্ষেত্রে ঐ পাতার রস গরম করে ছেকে ঐ রস ১০ ফোঁটায় একটু জল মিশিয়ে খেতে দিতে হয়। আধ ঘন্টা অন্তর দুই/তিন বার খাওয়ালে এই উপসর্গটা প্রশমিত হয়, তবে দুই তনি বারের বেশী খাওয়ানো উচিত নয়।
৮। ফেরিনজাইটিসে- অথবা লেরিন জাইটিস হলে পাতার রস ২ চামচ আধ কাপ অল্প গরম জলে মিশিয়ে গারগেল (মধৎমষব) করতে হয়। প্রত্যহ সকালে বৈকালে দুই বার করতে পারলে ভাল। এমন কি গলার মধ্যে ক্ষত ভাব দেখা দিলে সেটাও সেরে যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে এর সঙ্গে ২/৩ চামচ বাসক পাতার রস একটু গরম করে প্রত্যহ একবার করে খেতে পারলে কফের বিকারটা নষ্ট হয়।
৯। এক্জিমায়- এই পাতার রস লাগালে কমে যায়।
তথ্য সূত্র:
চিরঞ্জীব বনৌষধী
চিরঞ্জীব বনৌষধী
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য
১ম-খন্ড, পৃষ্ঠা-২৭৬
হরীতকী মধ্যম থেকে
বৃহদাকার চিরসবুজ বৃক্ষ। ত্রিফলার অন্যতম ফল হচ্ছে হরীতকী। হরীতকী গাছকে ভেষজ
চিকিৎসকরা মায়ের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। তারা বলেন, মানুষের কাছে এ বৃক্ষ মায়ের
মতোই আপন। মানুষের শরীরে সংক্রামিত প্রায় সব রোগ-ব্যাধির ওষুধ হিসেবে হরীতকীর
ব্যবহার রয়েছে। অর্শরোগে, রক্তার্শে, চোখের রোগ, পিত্তবেদনা, গলার স্বর বসে যাওয়া,
হৃদরোগ, বদহজম, আমাশয়, জন্ডিস, ঋতুস্রাবের ব্যথা, জ্বর, কাশি, হাঁপানি, পেটফাঁপা,
ঢেঁকুর ওঠা, বর্ধিত যকৃত ও প্লীহা, বাতরোগ, মহৃত্রনালীর অসুখ, ফুসফুস,
শ্বাসনালীঘটিত রোগে হরীতকী ফলের গুঁড়া ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ঘন ঘন পানির তৃষ্ণা কিংবা
বমি বমিভাব কাটাতেও হরীতকী ব্যবহৃত হয়। ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকী, বহেরা, হরীতকী_ এর
প্রতিটির সমপরিমাণ গুঁড়ার শরবত কোলেস্টেরল অর্থাৎ প্রেসার বা রক্তচাপ কমানোর
মহৌষধ। এক ওষুধ গবেষক দলের মতে, আধুনিক যে কোনো অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের তুলনায়
ত্রিফলা কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসহৃ। তাদের মতে, দ্রব্যগুলোর
দিক দিয়ে হরীতকীই সর্বশ্রেষ্ঠ। দ্বিতীয় স্থানে আমলকী এবং তৃতীয় স্থানে বহেরা।
ত্রিফলা শুধু কোলেস্টেরলই কমায় না বরং এতে প্লীহা ও যকৃতের উপকার হয়। এছাড়া
হরীতকীর কাঠ আসবাবপত্র, কৃষি যন্ত্রপাতি ছাড়াও নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। ফল থেকে
ট্যানিন, লেখার কালি ও রং পাওয়া যায়।
নানা রোগ নিরাময়ে
হরীতকী খুব উপকারী :
হরীতকী বললেই ত্রিফলার কথা আসে। ত্রিফলা মানে তিনটি ফলের সমাহার। এই তিনটি ফল হলো_
আমলকী, হরীতকী ও বহেড়া। তবে তিনটি ফলের মধ্যে হরীতকীর রয়েছে অসাধারণ গুণ। ফলে পাক
ধরলে হলুদাভ সবুজ বর্ণ ধারণ করে এবং চিবুলে তিতকুটে লাগে। ফলের কোনো কিছু ফেলনা
নয়। বীজের ভেতরের শাঁসও মজা করে খাওয়া যায়। হরীতকী ভেষজ গুণসমৃদ্ধ। আয়ুর্বেদিক ওষুধ
তৈরিতে ত্রিফলা ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও কলেরা ও আমাশয় নিরাময়ে এর যথেষ্ট ব্যবহার
রয়েছে। হরীতকী চূর্ণ ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পিত্তশূল দূর হয়। বিশেষভাবে
পরিশোধনের মাধ্যমে। পাইলস, হাঁপানি, চর্ম, ক্ষত, কনজাংটিভাইটিস রোগেও হরীতকী
ব্যবহৃত হয়। হরীতকীর কাঠ খুবই শক্ত এবং টেকসই। গৃহনির্মাণ এমনকি সুদৃশ্য আসবাবপত্র
তৈরিতে এ কাঠ ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য গুণাগুণের কারণে বাংলার প্রায় প্রতিটি বাড়ির
আঙিনায় নিমের পাশাপাশি মানুষ হরীতকীর গাছ লাগায়। এমনকি সরকারও বনায়ন কর্মসূচির
আওতায় রাস্তার পাশে হরীতকী রোপণে মনোনিবেশ করেছে।
হরীতকীর গুণাবলি :
আয়ুর্বেদিক বিজ্ঞানে
ত্রিফলা নামে পরিচিত তিনটি ফলের একটি হরীতকী। এর নানা গুণ আছে। স্বাদ তিতা। এটি
ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেরল-সমৃদ্ধ।
ব্যবহার:
হরীতকী দেহের অন্ত্র
পরিষ্কার করে এবং একই সঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের
খিঁচুনি কমায়। হৃৎপিণ্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে। এটা রেচক, কষাকারক,
পিচ্ছিলকারক,পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়বিক
শক্তিবর্ধক। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়বিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায়
ব্যবহৃত হয়। হরীতকীতে অ্যানথ্রাকুইনোন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরীতকী। অ্যালার্জি দূর করতে হরীতকী বিশেষ উপকারী। হরীতকী
ফুটিয়ে সেই পানি খেলে অ্যালার্জি কমে যাবে। হরীতকীর গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে
ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকবে। হরীতকীর গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের
উজ্জ্বলতা বাড়বে। গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরীতকী পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে
গার্গল করলে আরাম পাবেন। দাঁতে ব্যথা হলে হরীতকী গুঁড়া লাগান, ব্যথা দূর হবে। রাতে
শোয়ার আগে অল্প বিট নুনের সঙ্গে ২ গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরীতকীর গুঁড়া
মিশিয়ে খান। পেট পরিষ্কার হবে।
বহেড়া:
বিভিন্ন রোগে প্রয়োগ:
* ইন্দ্রিয়-দৌর্বল্যে : এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে রোজ দু’টি করে বহেড়া বিচীর শাঁস খান।
* শ্বেতী রোগে : বহেড়া
বিচির শাঁসের তেল বের করে শ্বেতীর ওপর লাগালে গায়ের রং অল্পদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক
হবে।
অকালে টাক পড়লেঃ বহেড়া বিচির শাঁস অল্প পানিতে মিহি করে বেটে চন্দনের মতো টাকে লাগালে, টাক সেরে যায়।
অকালে টাক পড়লেঃ বহেড়া বিচির শাঁস অল্প পানিতে মিহি করে বেটে চন্দনের মতো টাকে লাগালে, টাক সেরে যায়।
* শ্লেস্মায় : আধা
চা-চামচ বগেড়া চূর্ণ, ঘি গরম করে তার সাথে মিশিয়ে আবার গরম করে মধু মিশিয়ে চেটে
খেলে উপরকার পাওয়া যায়।
* আমাশয় : সাদা বা রক্ত
যে কোনও আমাশয়ে প্রতিদিন সকালে পানির সাথে বহেড়া চূর্ণ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
অকালে চুল পাকলেঃ বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ১০ গ্রাম ছাল নিয়ে পানি দিয়ে বাটুন। এক কাপ পানিতে গুলে পানিতে ছেঁকে নিন, এবার সে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
অকালে চুল পাকলেঃ বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ১০ গ্রাম ছাল নিয়ে পানি দিয়ে বাটুন। এক কাপ পানিতে গুলে পানিতে ছেঁকে নিন, এবার সে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
* ফুলো কমানোর জন্য : বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ছাল বেটে একটু গরম করে ফুলোয় প্রলেপ দিলে ফুলো কমে যাবে।ভেষজ দাওয়াই
ব্যবহার:
বহেড়া বিশেষভাবে
পরিশোধিত করে এর ফল, বীজ এবং বাকল ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় ।
বহেড়ার কাঠ হরিদ্রাভ ও শক্ত। এ কাঠ সহজে পানিতে পচে না। এটি নৌকা তৈরিতে ব্যবহার
হয় । ফল থেকে লেখার কালি বানানো হয় । বীজ থেকে বিশেষভাবে অঙ্কুরোদ্গম করা হয় ।
ঔষধি গুণ:
কথিত আছে, প্রতিদিন
বহেড়া ভেজানো পানি এক কাপ পরিমাণ পান করলে দীর্ঘায়ু হওয়া যায় । বহেড়া হৃৎপিণ্ড এবং
যকৃৎ রোগের আক্রমণ কমায় । সর্দি-কাশি নিরাময় করে। এটা কৃমিনাশক, স্বরনাশক এবং
অনিদ্রা দূর করে । এ ছাড়া পাইলস, হাঁপানি ও কুষ্ঠরোগে বহেড়ার চিকিৎসা বেশ ফলপ্রসূ ।
অশ্বগন্ধা :
অশ্বগন্ধা আমাদের দেশের
ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। গাছের গন্ধ ঘোড়া বা অশ্ব এর মত বলেই সংস্কৃতে একে
অশ্বগন্ধা বলে। বাংলায় ও আমার অশ্বগন্ধা-ই বলে থাকি। শক্তিবর্ধক হিসেবে এবং
এ্যাফ্রোডেসিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলেই ইংরেজিতে একে Indian Ginseng বলে।
Solanaceae ফ্যামিলির গাছ অশ্বগন্ধার বৈঙ্গানিক নাম Withania somnifera (L.)
Dunal. Withanine নামক রাসায়নিক উপাদান এই গাছ থেকে আলাদা করার কারণে এই গাছের
নামে Withania নামকরণ করা হয়েছে। আর somnifera এসেছে somnifer থেকে যার মানে
নিদ্রা আনয়নকারী। মূল এবং পাতা স্নায়ুর বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত হয়। এ গাছ বাংলাদেশ,
ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকায় পাওয়া যায়। নিদ্রা আনয়নকারী ঔষধ হিসেবে প্রচীন
মেসোপটেমিয়া এবং মিশরে এর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।
কালমেঘ :
কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। ১ সে.মি. লম্বা ফুলের রং গোলাপী। দেড় থেকে দু সে.মি. লম্বা ফল অনেকটা চিলগোজার মতন দেখতে।শিকড় ব্যতীত কালমেঘ গাছটির সব অংশই ঔষুধের কাজে লাগে। কালমেঘ অত্যন্ত তেতো এবং পুষ্টিকর। মানব দেহের রোগপ্রতিরোধী শক্তি বৃদ্ধি করে। জ্বর, কৃমি, আমাশয়, সাধারণ শারীরিক দুর্বলতা এবং বায়ু আধিক্যে কালমেঘ অত্যন্ত উপকারী।
শিশুদের যকৃৎ রোগে এবং হজমের সমস্যায় কালমেঘ ফলপ্রদ। কালমেঘের পাতা থেকে তৈরী আলুই পশ্চিম বাংলার ঘরোয়া ঔষুধ যা পেটের অসুখে শিশুদের দেওয়া হয়। টাইফয়েড রোগে এবং জীবানুরোধে কালমেঘ কার্য্করী। সাধারণ একটা বিশ্বাস ছিল যে সাপের কামড়ে কালমেঘ খুব উপকারী। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে কথাটা ভুল। কোথাও কোথাও কালমেঘ গাছ বেটে সরষের তেলে চুবিয়ে নিয়ে চুলকানিতে লাগানো হয়। গাছের পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভার রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
কালমেঘ গাছের পাতার রস জ্বর, কৃমি, অজীর্ণ, লিভার প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা শিশুদের বদহজম ও লিভারের সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহার করছে। এ গাছের রস রক্ত পরিষ্কারক, পাকস্থলী ও যকৃতের শক্তিবর্ধক ও রেচক হিসেবেও কাজ করে। আবার এ গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে ঘা-পাঁচড়া জাতীয় রোগ দূর হয় বলে আদিবাসীদের বিশ্বাস।
শিশুদের যকৃৎ রোগে এবং হজমের সমস্যায় কালমেঘ ফলপ্রদ। কালমেঘের পাতা থেকে তৈরী আলুই পশ্চিম বাংলার ঘরোয়া ঔষুধ যা পেটের অসুখে শিশুদের দেওয়া হয়। টাইফয়েড রোগে এবং জীবানুরোধে কালমেঘ কার্য্করী। সাধারণ একটা বিশ্বাস ছিল যে সাপের কামড়ে কালমেঘ খুব উপকারী। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে কথাটা ভুল। কোথাও কোথাও কালমেঘ গাছ বেটে সরষের তেলে চুবিয়ে নিয়ে চুলকানিতে লাগানো হয়। গাছের পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভার রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
কালমেঘ গাছের পাতার রস জ্বর, কৃমি, অজীর্ণ, লিভার প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা শিশুদের বদহজম ও লিভারের সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহার করছে। এ গাছের রস রক্ত পরিষ্কারক, পাকস্থলী ও যকৃতের শক্তিবর্ধক ও রেচক হিসেবেও কাজ করে। আবার এ গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে ঘা-পাঁচড়া জাতীয় রোগ দূর হয় বলে আদিবাসীদের বিশ্বাস।
পুদিনা পাতা :
পুদিনা পাতা প্রাচীনকাল থেকেই বেশ জনপ্রিয় ঔষধ হিসেবে পরিচিত। বহু রোগ আরোগ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। পুদিনা পাতা এক ধরনের সুগন্ধি গাছ। এই গাছের পাতা তরি-তরকারির সাথে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে বেশি ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের বড়া তৈরির কাজে।
পুদিনা এক প্রকারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বিশ্বের অনেক দেশেই পুদিনার গাছ জন্মে। এর পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য স্থানীয় নামঃ Mint, nana। এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Mentha spicata । এটি Lamiaceae পরিবারের অন্তর্গত।
পেটের পীড়ায় :
এটি ইরেটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম [ আইবিএস ] এবং দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা কোলনের পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রন করে।
এটি ইরেটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম [ আইবিএস ] এবং দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা কোলনের পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রন করে।
অ্যাজমা :
পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরীতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। এছাড়াও এ ঔষধি প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শাসনালী পরিষ্কার থাকে।
পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরীতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। এছাড়াও এ ঔষধি প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শাসনালী পরিষ্কার থাকে।
এন্টিক্যান্সার :
পুদিনায় রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এটি স্তন, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ফুসফুস, কোলন এবং ত্বকের ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
পুদিনায় রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এটি স্তন, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ফুসফুস, কোলন এবং ত্বকের ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ভেষজ গুণ পুদিনা
পুদিনা খুবই উপকারী একটি উদ্ভিদ। আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মুখের স্বাদ বাড়াতেও এটি খুব কার্যকর। এছাড়াও আরও যেসব ক্ষেত্রে পুদিনার পাতা ব্যবহার করা যায়, তা হলো:
পুদিনা খুবই উপকারী একটি উদ্ভিদ। আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মুখের স্বাদ বাড়াতেও এটি খুব কার্যকর। এছাড়াও আরও যেসব ক্ষেত্রে পুদিনার পাতা ব্যবহার করা যায়, তা হলো:
১. পুদিনার তাজা পাতা পিষে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর যদি তা ধুয়ে ফেলা যায়, তা হলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়। ব্রণ ওঠাও বন্ধ হয়।
২. পুদিনার পাতা পিষে রস করে তার ভেতর দু’তিন ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তা পান করলে ক্লান্তিভাবও দূর হয়।
৩. কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার নাকের কাছে কিছু তাজা পুদিনা পাতা ধরুন। দেখবেন, জ্ঞান ফিরে পেয়েছে লোকটি।
৪. পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করেন। যাদের চুলে উকুন আছে, তারা খুব উপকার পাবেন।
৫. শরীরের ব্যথা দূর করতে পুদিনা পাতার চা খুব কাজে দেয়।
৬. মাথা ও পেট ব্যথা নিরাময়েও পুদিনার পাতা খুব উপকারী।
৭. যাদের মাঝে মধ্যে হেঁচকি ওঠে, তারা পুদিনা পাতার সঙ্গে গোল মরিচ পিষে তা ছেঁকে নিয়ে রসটুকু পান করুন। দেখবেন হেঁচকি বন্ধ হয়ে গেছে।
৩. কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার নাকের কাছে কিছু তাজা পুদিনা পাতা ধরুন। দেখবেন, জ্ঞান ফিরে পেয়েছে লোকটি।
৪. পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করেন। যাদের চুলে উকুন আছে, তারা খুব উপকার পাবেন।
৫. শরীরের ব্যথা দূর করতে পুদিনা পাতার চা খুব কাজে দেয়।
৬. মাথা ও পেট ব্যথা নিরাময়েও পুদিনার পাতা খুব উপকারী।
৭. যাদের মাঝে মধ্যে হেঁচকি ওঠে, তারা পুদিনা পাতার সঙ্গে গোল মরিচ পিষে তা ছেঁকে নিয়ে রসটুকু পান করুন। দেখবেন হেঁচকি বন্ধ হয়ে গেছে।
৮. কফ-কাশিতে আমরা সাধারণত এক্সপেক্টোরেন্ট জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকি। এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ হলো গলা থেকে কফ বের করে দেয়া। কিন্তু এর একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এসব ওষুধ খেলে ঘুম ঘুম ভাব হয়। তাই এর বিকল্প হিসেবে আপনি পুদিনা পাতার সাহায্য নিতে পারেন। গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে পান করুন। পুদিনা পাতা এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ করবে। বোনাস হিসেবে আপনি পেতে পারেন আরো একটি বড় ধরনের উপকার। আর তা হলো পুদিনা পাতা আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে।






















very nice post...
ReplyDeletethank you
DeleteThank you for this article!! I really enjoyed to read this blog post.The information you give will prove to be of great value to me, I hope that. It is our wish that you continue to write great articles in such a future. Thanks for sharing this article.Thanks for sharing the wonderful article
ReplyDelete